বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের অমর নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুরহস্য ঘিরে আবারও শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। প্রায় তিন দশক পর তাঁর সাবেক স্ত্রী সামিরা হক এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, সালমান শাহ মানসিকভাবে ছিলেন আত্মহত্যাপ্রবণ এবং বিয়ের আগেই একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।
সামিরা হকের ভাষায়, “ইমন (সালমান শাহ) মানসিকভাবে ছিল সুইসাইডাল বাই নেচার। বিয়ের আগেই সে তিনবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। একবার মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার পর, একবার আমাকে বিয়েতে রাজি করানোর জন্য, আরেকবার অন্য একটি ব্যক্তিগত ঘটনায়।”
সামিরা জানান, এই তিনটি ঘটনার দুটির রেকর্ড মেট্রোপলিটন হাসপাতালে এবং একটি অন্য হাসপাতালে সংরক্ষিত আছে।
১৯৯২ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে সালমান শাহ (আসল নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন) বিয়ে করেন খালার বান্ধবীর মেয়ে সামিরা হককে। সামিরা ছিলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক শফিকুল হক হীরার মেয়ে এবং সৌন্দর্যচর্চা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
সালমান শাহর মৃত্যুর পর তাঁর মা নীলা চৌধুরী বারবার দাবি করেছেন, তাঁর ছেলে আত্মহত্যা করেননি—তাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে পিবিআই-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন এবং এর পেছনে পাঁচটি কারণও উল্লেখ করা হয়।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনে নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সালমান শাহর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বিভিন্ন সংস্থার তদন্তে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হলেও পরিবার তা মানেনি।
সম্প্রতি সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় আদালত হত্যা মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন, এবং রমনা থানাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মাত্র ২৫ বছরের জীবনে সালমান শাহ অভিনয় করেছিলেন ২৭টি চলচ্চিত্রে, যার সবগুলোই বাণিজ্যিকভাবে সফল ছিল। নব্বইয়ের দশকে রোমান্টিক নায়কের নতুন যুগ শুরু হয় তাঁর হাত ধরে।
চলচ্চিত্রে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো আবির্ভূত হয়ে অল্প সময়েই হারিয়ে যাওয়া সালমান শাহর জীবন ও মৃত্যু—এখনও কোটি ভক্তের কাছে এক অনন্ত রহস্য।


















