আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠনে সক্ষম হলে দলটির বর্তমান আমির ডা. শফিকুর রহমান দেশের ইতিহাসে সিলেট থেকে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা জোরদার হয়েছে। তিনি দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বে অবস্থান, দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং সংগঠনে গ্রহণযোগ্যতার কারণে সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রীর তালিকায় সর্বাগ্রে বিবেচিত হচ্ছেন বলে জানা গেছে।
মৌলভীবাজার থেকে জাতীয় নেতৃত্বে পৌঁছানোর পথচলা
ডা. শফিকুর রহমান ১৯৫৮ সালের ৩১ অক্টোবর মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের এক সম্মানিত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বরমচাল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭৪ সালে এসএসসি এবং সিলেট এম সি কলেজ থেকে ১৯৭৬ সালে এইচএসসি সম্পন্ন করেন তিনি। পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে সিলেট মেডিকেল কলেজ (বর্তমান এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ) থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করে চিকিৎসা পেশায় যুক্ত হন।
চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি তার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় জাসদ ছাত্রলীগের মাধ্যমে। ১৯৭৩ সালে ছাত্ররাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার পর ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরে প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি সিলেট মেডিকেল কলেজ শাখা ও সিলেট শহর শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
জামায়াতে ইসলামীতে উত্থান
১৯৮৪ সালে তিনি জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়ে মূলধারার রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। এরপর সিলেট শহর, জেলা ও মহানগরের আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল নিযুক্ত হন এবং দায়িত্বশীল নেতৃত্বে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন।
২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর রুকনদের প্রত্যক্ষ ভোটে তিনি জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির নির্বাচিত হন। বর্তমান ২০২৬–২০২৮ কার্যকালের জন্যও তার নেতৃত্বে দল সংগঠন শক্তিশালীকরণ, নীতি পুনর্গঠন ও নতুন কর্মসূচি বাস্তবায়নে মনোযোগ দিচ্ছে।
সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আলোচনায়
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াত নির্বাচনে জয়ী বা জোটবদ্ধ আকারে সরকার গঠন করতে পারলে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বে অবস্থান, অভিজ্ঞতা এবং সাংগঠনিক জনপ্রিয়তার কারণে ডা. শফিকুর রহমানই প্রধাণমন্ত্রিত্বের জন্য দলের স্বাভাবিক পছন্দ হয়ে উঠতে পারেন। এতে সিলেটের জনগণের মধ্যেও নতুন সম্ভাবনার আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে, কারণ এর আগে কোনো সিলেটি জাতীয় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পাননি।
যদিও সবকিছুই নির্ভর করছে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ও রাজনৈতিক সমীকরণের ওপর, তারপরও ডা. শফিকুর রহমানকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে সম্ভাবনার পরিধি বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


















