পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের দুটি সংগঠনের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও পাল্টাপাল্টি অবস্থান দেখা দিয়েছে। বিষয়টি ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
জাতীয়তাবাদী চেতনার শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) পবিপ্রবি ইউনিট সম্প্রতি শহীদ জিয়া গবেষণা পরিষদের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয়। ইউট্যাবের এই সিদ্ধান্তের পরদিনই শহীদ জিয়া গবেষণা পরিষদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রতিবাদ জানায়, যা দুই সংগঠনের মধ্যে সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত করে তোলে।
ইউট্যাবের সভাপতি বেসিক সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মামুনুর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত দলীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে শহীদ জিয়া গবেষণা পরিষদের কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
তবে শহীদ জিয়া গবেষণা পরিষদের আহ্বায়ক ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের অধ্যাপক ড. বদিউজ্জামান ও সদস্য সচিব কৃষি অনুষদের অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিন এ সিদ্ধান্তকে “অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক” আখ্যা দেন। তাঁরা বলেন, কোনো সংগঠন প্রশাসন বা কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন ছাড়া অন্য সংগঠনের কার্যক্রম স্থগিত করতে পারে না।
এই অবস্থানে থেকে শহীদ জিয়া গবেষণা পরিষদ ১০ অক্টোবর প্রতিবাদলিপি প্রকাশ করে জানায়, ইউট্যাব পবিপ্রবি ইউনিটের এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ এখতিয়ারবহির্ভূত, বেআইনি ও সংগঠনের ঐক্য বিনষ্টকারী। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি আনিসুর রহমান আনিস ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক তালুকদার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “এটি মুক্তবুদ্ধির চর্চা ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতির পরিপন্থী একটি পদক্ষেপ, যা দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে।”
বিতর্কের বিষয়ে ইউট্যাবের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম জানান, “আমি এই বিষয়ে অবগত নই। প্রথমবার আপনার কাছ থেকেই শুনলাম। যদি এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে, তা কেন্দ্রীয়ভাবে জানানো হয়নি।”
অন্যদিকে শহীদ জিয়া গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আনিসুর রহমান আনিস বলেন, “১৯৯৭ সালে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই সংগঠনের উদ্বোধন করেন। বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা জ্ঞানবহির্ভূত।” তিনি আরও বলেন, “একটি সংগঠন অন্য সংগঠনের ওপর সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। ইউট্যাবের কিছু শিক্ষক হয়তো শিক্ষাগতভাবে ভালো, কিন্তু সাংগঠনিক জ্ঞান তাদের কম।”
বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের এই বিভাজন জাতীয়তাবাদী রাজনীতির পরিসরে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে। কেন্দ্রীয় নেতারা দ্রুত বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা না করলে পবিপ্রবিতে শিক্ষক রাজনীতির অঙ্গনে স্থায়ী অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


















