সিলেটের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম বলেছেন, “শিক্ষকতাকে শুধুমাত্র একটি পেশা হিসেবে নয়, বরং নেশা ও ইবাদত হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সন্তানরা যেন মানুষের মতো মানুষ হয়ে গড়ে ওঠে, সে দায়িত্ব আপনাদের। অভিভাবকরা সন্তানদের আপনাদের কাছে আমানত হিসেবে দিয়েছেন—এই আমানতের খেয়ানত করবেন না, বরং তাদের যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলুন। আপনারা চাইলে যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারবেন। শুধু জানাবেন, কী ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন—আমরা তা দিতে প্রস্তুত।”
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার সরকারি মহিলা ডিগ্রি কলেজে নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, “পরিশ্রম করতে না পারলে তুমি যতই মেধাবী হও না কেন, সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে, সময়মতো খাওয়া-দাওয়া করতে হবে, নিয়মিত স্কুল-কলেজে যেতে হবে এবং প্রতিদিন খেলাধুলা করতে হবে। কোনোভাবেই অসুস্থ থাকা যাবে না। তোমরাই আগামী দিনের বাংলাদেশ। তোমরা যদি মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া না করো, তাহলে শুধু তোমরাই নয়, তোমাদের জেলা ও উপজেলা পিছিয়ে পড়বে।”
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমি চাই আমাদের সন্তানরা ভালো কলেজে পড়ুক, ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হোক এবং নিজেদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলুক।”
নবীনবরণ অনুষ্ঠান শেষে জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম দুপুর ২টায় ওসমানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং গয়নাঘাট থেকে কালিবাড়ি বাজার পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, শিগগিরই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অনুমোদন প্রদান করা হবে।
এছাড়া, তিনি বলেন, “সড়ক উন্নয়ন ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাই আমাদের অগ্রাধিকার।”
দুপুর আড়াইটায় জেলা প্রশাসক ওসমানীনগর থানায় যান এবং পুলিশ কার্যক্রম পর্যালোচনা করেন। তিনি বলেন, “সন্ত্রাস ও অপরাধ রোধে পুলিশকে আরও সক্রিয় হতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা আমাদের সকলের দায়িত্ব।”
দুপুর ৩টায় তিনি সাবরেজিস্ট্রার অফিস পরিদর্শন করে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে তিনি বলেন, “জনসেবা দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে প্রদান করতে হবে। প্রশাসনিক কার্যক্রম জনগণের স্বার্থ রক্ষায় কার্যকর হতে হবে।”
সাড়ে ৩টায় উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে কৃষকদের মাঝে সার ও বীজ বিতরণ কার্যক্রমে অংশ নেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, “কৃষি উন্নয়ন দেশের অগ্রগতির মূল চালিকা শক্তি। কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করা আমাদের কর্তব্য।”
বিকেল ৪টায় জেলা প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি বলেন, “উন্নয়ন কার্যক্রমে দপ্তরগুলোর মধ্যে সমন্বয় আরও শক্তিশালী করতে হবে। জনগণ যাতে দ্রুত ও মানসম্মত সেবা পায়, সেই দিকে সকলকে মনোযোগ দিতে হবে।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন, সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শাহনাজ পারভিনসহ উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।


















