সিলেট-১ (সদর ও নগর) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমানকে নিয়ে তার সন্তান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন, যা ইতোমধ্যে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
স্ট্যাটাসে তিনি পিতার ব্যক্তিগত, পেশাগত ও রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে লেখেন, “তিনি হয়তো আসমানের চাঁদ এনে দেবেন—এমন প্রতিশ্রুতি দেন না। তবে আল্লাহ চাইলে তিনি জনগণের জন্য কী করতে পারেন, তার অতীত জীবনের দিকে তাকালেই তা পরিষ্কার হয়ে যায়।”
ছোটবেলা থেকেই সংগ্রামী জীবন
স্ট্যাটাসে উল্লেখ করা হয়, খুব অল্প বয়সে বাবা–মাকে হারানোর পর নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি ভাইবোনদের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন মাওলানা হাবিবুর রহমান। সিলেট আলিয়া মাদরাসায় ছাত্রনেতা হিসেবে ভিপি নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তার নেতৃত্বের সূচনা।
পরবর্তীতে শিক্ষকতা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন সামাজিক-শিক্ষামূলক সংস্থা—দি সিলেট ইসলামিক সোসাইটি, দি সিলেট ফাউন্ডেশন, সাউথ সিলেট ওয়েলফেয়ার সোসাইটিসহ নানা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা তুলে ধরা হয়।
সাংবাদিকতা, সমাজসেবা ও উদ্যোক্তা হিসেবে ভূমিকা
সিলেটের প্রাচীন দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকার পরিচালনা পরিষদে দায়িত্ব পালন এবং আবাসন সংকট মোকাবিলায় ‘সবুজবাগ আবাসিক এলাকা’ গড়ে তোলার উদ্যোগও স্ট্যাটাসে উল্লেখ করা হয়। তিনি নিজ উদ্যোগে সবুজবাগ এলাকার মেইন রোড সরকারি মালিকানায় হস্তান্তর করেন—এটিকেও দায়িত্বশীলতার উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়।
সমাজের যেকোনো দুর্যোগ–দুর্বিপাকে ব্যক্তিগত ও সাংগঠনিকভাবে সহযোগিতা করা মাওলানা হাবিবুর রহমানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
একই সঙ্গে “সিলেট ট্রেড সেন্টার”, “হামাদান রেস্টুরেন্ট”, “ইউনিপেক্স কোল্ড স্টোরেজ”সহ একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকার কথা উল্লেখ করা হয়। স্বাস্থ্য সেবায় ইবনে সিনা হাসপাতালের প্রতিষ্ঠা এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্টে ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকেও স্ট্যাটাসে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলা
সিলেট আলিয়া মাদরাসা থেকে শিবিরের সভাপতি ও ছাত্র সংসদের ভিপি হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ, ১৯৮২ সালে জামায়াতে যোগদান, ১৯৯৮ সাল থেকে কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন—এসব রাজনৈতিক অর্জন তুলে ধরেন তার পুত্র।
সিলেট বিভাগ আন্দোলন, এরশাদবিরোধী আন্দোলন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলন, শাবি প্রতিষ্ঠা ও নামকরণ আন্দোলন, টিপাইমুখ বাঁধ বিরোধী আন্দোলনে অগ্রসৈনিক হিসেবে ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
এ ছাড়া ১৯৯৯ সালে গ্রেফতার ও নির্যাতন এবং ২০১০–২০২৪ সাল পর্যন্ত নজরবন্দী থাকা ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার ঘটনাও স্ট্যাটাসে উঠে আসে।
‘চটকদার প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তবতার রাজনীতি’
স্ট্যাটাসের শেষাংশে তিনি লেখেন—
“তিনি চটকদার প্রতিশ্রুতি দেন না। নৈতিকতার শক্তিতে এমন একটি সিলেট গড়তে চান যেখানে জনপ্রতিনিধি হবে জনগণের সেবক। দুর্নীতি করবেন না—করতেও দেবেন না।”
শেষে তিনি সিলেট-১ আসনের ভোটারদের দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে ‘ইনসাফ প্রতিষ্ঠার রাজনীতি’কে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান।


















