পটুয়াখালীর বাউফলে মা ইলিশ সংরক্ষণের অভয়ারণ্যে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দুপুরে কিছু অসাধু জেলে তেঁতুলিয়া ও ধুলিয়া পয়েন্টে জাল ফেলেন। শনিবার (৪ অক্টোবর) নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিন উপজেলা প্রশাসন ইউএনওর নেতৃত্বে নদী পরিদর্শনে গেলে অভিযানের বাজার শুরু হওয়ার আগেই ওই জেলেরা নদী ত্যাগ করে চলে যান।
জানা গেছে, অভিযানের সময় উপজেলা প্রশাসনের সদস্যদের মধ্যে কেউ কেউ ফেসবুকে লাইভ চলাকাল করে দেন। লাইভে অভিযান চলার তথ্য তৎক্ষণাৎ নদীতীরের এজেন্টদের দিকে পৌঁছে যায় এবং তারা দ্রুত খবর ছড়িয়ে দিয়ে জেলেদের সতর্ক করেন। ফলে অভিযানের টহল দল বড় নদীতে পৌঁছার আগেই অসাধু জেলেরা ডাঙায় ফিরে আসে এবং আটক এড়াতে সক্ষম হয়।
অভিযান সূত্রে বলা হয়েছে, বিকেলে মৎস্য অফিসের সামনে থেকে দুটি ট্রলারে করে ইউএনও’র নেতৃত্বে একটি টিম নদীতে রওনা দিয়েছিলেন। ট্রলারে ওঠার পরই অভিযানের সঙ্গে থাকা কয়েকজন সদস্য লাইভ শুরু করেন। লাইভের কারণে অভিযানের সুরক্ষা ও কার্যকারিতা ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে অভিযানের একাধিক অংশগ্রহণকারী ও স্থানীয়রা দাবি করেছেন।
তেঁতুলিয়া নদীর তীরবর্তী ধুলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মোসলেম উদ্দিন বলেন, “নদীতে কয়েকজন জেলে ইলিশ শিকার করছিলেন। তীরের সহযোগীরা দেখে-শুনে টেলিফোনে খবর দেয়; এরপর সবাই জাল তুলে নিরাপদে সরে যায়।”
ফেসবুক লাইভ নিয়ে সচেতন মহল সমালোচনা করেছেন। মন্তব্যকারীদের মধ্যে কেউ বলছেন, অভিযান গোপন করা হলে তা বেশি কার্যকর হয়; খোলা মিনতি-প্রচার করলে অসাধুদের পালানোর সময় মিলিয়ে দেয়। একজন সাংবাদিক নেতাও লাইভের পদ্ধতিকে অভিযানের সাফল্যের পথে অন্তরায় বলে মন্তব্য করেছেন।
এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আমিনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি যোগাযোগে পাওয়া যাননি। পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, লাইভ সংক্রান্ত অভিযোগ তিনি শুনেছেন; বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তিনি আরও বলেন, “আমরা এই বছর জিরো টলারেন্স নীতি মেনেই কাজ করছি। যেকোনো অসাধু মৎস্য আহরণের অভিযোগ পেলে কড়াভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”